মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৫ অপরাহ্ন
বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গভর্নিং বডি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার খাসেরচর মাহমুদিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শামছুদ্দিনকে বরখাস্ত করার পরেও তিনি জোরপূর্বক স্বপদে বহাল রয়েছেন। গভর্নিং বডি ইতিমধ্যে বরখাস্তের রেজুলেশনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেয়ার পরও মো. শামছুদ্দিন দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেযায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটির লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ.জ.ম ছাদেকুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর বিধি মোতাবেক সহকারি অধ্যাপক মো. শামছুদ্দিন দায়িত্বভার গ্রহন করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই রেজুলেশন খাতা বাসায় নিয়ে রাখা, জাতীয় দিবসে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকা, শিক্ষকবৃন্দ ও কমিটির লোকজনের সাথে অসদাচরণসহ বাজেট মিটিং না করার অভিযোগ ওঠে। সেই সাথে মাদ্রাসার শূন্যপদে অধ্যক্ষসহ আরো ৪টি সৃষ্টপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশের সিদ্ধান্ত হলেও গভর্নিংবডির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে ১ মাসের ছুটিতে গিয়ে কালক্ষেপন করেন তিনি।
এ ছাড়া মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধু কর্ণার নিমার্ণেও অনীহা প্রকাশ করেন তিনি।তার এসব কর্মকান্ডে ১১ আগস্ট মাদ্রাসা কমিটি মো. শামছুদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে বরখাস্ত করেন এবং সিনিয়র প্রভাষক মো. আকরাম হোসেনের কাছে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসা কমিটির এক সদস্য জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-শৃংখলা ভঙ্গের কারণে মো. শামছুদ্দিনকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। ওই মাসের ২৫জুন লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করলে চাকরি বহাল থাকে।
এবার নতুন করে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মো. শামছুদ্দিন। তাকে নিয়ে মাদ্রাসার ভেতর ও বাইরে উত্যপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জাতীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গভর্নিংবডির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, গত মাসের ১৮ তারিখে আমাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার আগেই তার অপকর্মের জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মো. আকরাম হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে মো. শামছুদ্দিন প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের পায়তারা করছেন।
খাসেরচর মাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শামছুদ্দিন বলেন, আমি অফিসিয়ালি বরখাস্তের কোনো চিঠিপত্র পাইনি। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সিনিয়র হিসেবে আমি দায়িত্ব পেয়েছি।বিধি বিধানের ওপর ভিত্তি করেই কার্যক্রম চালানো হয়েছে। কমিটি যদি কোনো কাগজপত্র করে থাকে তা ব্যাক ডেটে করেছে। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির এ সমস্ত ব্যাপারে কিছু বলার অধিকার নাই।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সিরাজ-উদ-দৌল্লা বলেন, অফিসিয়ালি পত্র পেয়ে থাকলে মো. শামছুদ্দিন সাহেবের দায়িত্ব হস্তান্তর করা উচিত।যদি সে অন্যায় মনে করে তাহলে আদালতে আশ্রয় নিতে পারে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করা , অনুমতি ছাড়া ছুটিতে থাকা, রেজুলেশন খাতা বাসায় রাখা বিধি সম্মত নয়। ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে আমরা দ্রুত বসে উভয় পক্ষের কথা শুনে একটা ব্যবস্থা নেব।